You are currently viewing চুলের যত্নে ১৫ টি সহজ ঘরোয়া টিপস!!!

চুলের যত্নে ১৫ টি সহজ ঘরোয়া টিপস!!!

চুল নারীদের অন্যতম সৌন্দর্য। তবে চুল পড়ার বিষয়টা এখন সাধারন হয়ে দাঁড়িয়েছে। তার উপর শীতকালে তো খুশকি সহ আরও বিভিন্ন ধরনের সমস্যা দেখা দেয়। তাই আজ আমরা চুলের আলোচনা করব চুলের যত্নে ঘরোয়া টিপস নিয়ে। এতে করে বাসায় বসেই সহজে চুলের যত্ন নিতে পারবেন।

ভেজা চুলকে না আঁচড়ানো

অনেকেই চুল ভেজানোর পর চিরুনি দিয়ে আঁচড়ে নেন। তবে চুল যখন ভিজে অবস্থায় থাকে, তখন চুলের অবস্থা থাকে ভেঙে যাওয়ার মতো। তাই ভেজা চুল আঁচড়ালে চুলের গোড়া থেকেও টান পড়ে। যার জন্য কিনা চুল উঠে আসে সহজেই। তাই যদি চুল পড়া কমাতে চান, তাহলে অবশ্যই ভেজা চুলকে আঁচড়ানো বা তোয়ালে দিয়ে বেশি মোছা থেকে বিরত থাকুন। একই সাথে হেয়ার ড্রায়ার দিয়ে শুকানোর চেয়ে যদি প্রাকৃতিক ভাবে চুল শুকাতে পারেন, তাহলে সেটা সবথেকে ভালো হয়।

নিয়ম মেনে শ্যাম্পুর ব্যবহার

চুলে অনেকেই প্রতিদিন শ্যাম্পু করেন। কেউ আবার ৮ থেকে ১০ দিন পর পর। তবে এমনটা না করে সপ্তাহে নিয়ম করে ২ বার কিংবা ৩ বার শ্যাম্পুর ব্যবহার করা ভালো৷ কারণ, এতে করে চুলে সহজে ময়লা তো জমেই না, তার উপর চুল মসৃন থাকে। তবে একটা জিনিস মাথায় রাখবেন। শ্যাম্পু ব্যবহার করার পর অবশ্যই চুলে কন্ডিশনার ব্যবহার করতে হবে। নইলে চুল রুক্ষ ও শুষ্ক হয়ে যায়। আবার সহজেই চুলে প্যাঁচ লেগে যায়।

সব প্রোডাক্ট একই কোম্পানির ব্যবহার করতে চেষ্টা করুন

অনেকেই  চুলের জন্য দরকারি প্রতিটি প্রোডাক্ট একেকটি একেক কোম্পানির ইউজ করে থাকি। তবে, এটা করলে চুলের ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা তো থাকেই, আবার চুলের ড্যামেজ, চুল পড়া সবকিছুর সমস্যা কয়েক গুণে বেড়ে যায়। কারণ, আপনি যদি ডাভ কোম্পানির শ্যাম্পু ব্যবহার করেন, আবার তারপর সানসিল্ক এর কন্ডিশনার ব্যবহার করেন তাহলেমএটা চুলে বিন্ন প্রভাব ফেলতেে পারে। তাই আলাদা কোম্পানির প্রোডাক্ট ব্যবহার না করাই উত্তম। এতে চুলে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই সমস্যা দেখা দেয়।

কন্ডিশনার চুলের বহিরাগত অংশের জন্য

অনেকে কন্ডিশনার চুলে প্রয়োগ করার সময় গোড়াতেও ব্যবহার করেন। তবে কন্ন্ডিশনার চুলের গোড়াতে ব্যবহৃত হলে তা চামড়ায় ক্ষতিকর প্রভাব ফেলে। এজন্য কন্ডিশনার শুধুমাত্র ব্যবহার করতে হবে চুলের উপরের স্তরে। উপরের স্তরে কন্ডিশনার ব্যবহার করবপন তবে পরিমাণমতো। একসাথে বেশি কন্ডিশনার ব্যবহার করলে চুল একসময় তৈলাক্ত ভাব ধারণ করে। যা অস্বস্তিকর হয়ে দাঁড়ায়।

টাইট করে চুল বাঁধা ভালো নয়

অনেকে আঁটসাঁট করে চুল বাঁধতে পছন্দ করেন। কেউ আবার ঘুমের সময়ে খুব শক্ত করে চুল বেনী করেন। তবে এতে চুল অগোছালো হয়না ঠিকই, তবে চুল সহজেই ভেঙে যায়। তাই চুল একটু আলগা করে বাঁধা উচিত। এতে করে চুলটাতে বেশি টান খায় না। আর নইলে চুল বেশি টান খেলে চুল পড়া বেড়ে যায়।

নিয়ম মেনে তেলের ব্যবহার

চুল ভালো রাখার জন্য তেলের বিকল্প নেই। কথায় আছে, “জলে চুন তাজা, তেলে চুল তাজা”। তবে অনেকেই চুলকে তেলের স্পর্শ থেকে বিরত রাখেন। আদতে এটা কোনো স্টাইল নয়। চুলে অবশ্যই ঠিকঠাক মতো তেল মালিশ করতে হবে। শীতে অলিভ অয়েল ব্যবহার করা ভালো। নারকেল তেল ব্যবহার করলেও ভালো হয় বছরের অন্য সময়টাতে। আবার আপনি আপনার পছন্দ মতো যেকোনো ব্রান্ডের তেল ব্যবহার করতে পারেন। তেলের ব্যবহার চুলের যত্নে ঘরোয়া টিপস এর মধ্যে অন্যতম।

বেস্ট এক্সট্রা ভার্জিন কোকোনাট অয়েল

গরম পানি চুলের জন্য মানানসই নয়

অনেকে শীতকালে গরম পানি দিয়ে গোসল করেন। যার জন্য চুলেও ব্যবহার করেন গরম পানি। তবে এতে চুলের গোড়া পুষ্টি পায় না। চুলে ড্যামেজ দেখার সমস্যা তো আছেই। চুলে খুশকির দেখা পাওয়া যায়। আর গরম পানি চুলকে একটু একটু করে রুক্ষও করে তোলে বটে। এই কারণে, অবশ্যই ঠান্ডা পানি দিয়ে চুল ধুতে হবে। নইলে চুল সুস্থ ও মসৃন থাকে না।

নিয়মিত চুলে আঁচড় টানার অভ্যেস করুন

সবসময় চেষ্টা করুন চুলে আঁচড় টানার তবে ভেজা চুল ব্যাতীত। কারণ চুলে চিরুনি দিয়ে আঁচড় টানার ফলে মাথার চামড়াতে রক্ত চলাচল বৃদ্ধি পায়। যার জন্য মাথাব্যথার সমস্যা কম হয়, আবার চুলও সুন্দর থাকে। চেষ্টা করবেন ঘুমাতে যাওয়ার আগে ও ঘুম থেকে উঠে চুল আঁচড়ানোর অভ্যেস গড়ে তোলার। চুল গোছানো ও পরিপাটি থাকলে চুলে তেমন সমস্যা দেখা যায় না।

হেয়ার প্যাক ব্যবহার করা  ভালো

চুলে বিভিন্ন আয়ুর্বেদিক প্যাক ব্যবহার করা ভালো। এতে চুল মাঝে মাঝে কিছু পুষ্টি পায়, যা চুলকে স্বাস্থ্যজ্জ্বল করে তোলে৷ এছাড়া চুলের প্রয়োজনীয় পুষ্টি উপাদান সরবরাহ করতে পারলে চুলের যেকোনো সমস্যা একটু একটু করে কমতে থাকে। চুলে ব্যবহার করার জন্য অ্যালোভেরা জেল দারুণ উপকারী। এছাড়াও, আমলকী গুঁড়া, ডিম, মেহেদী দিয়ে তৈরি প্যাক চুলে লাগাতে পারেন।

বেশি ক্যামিকেল প্রোডাক্ট নয়

চুলে অনেকেই প্রচুর পরিমাণে ক্যামিকেল প্রাডাক্ট ব্যবহার করেন। তবে এটা মোটেও যুক্তিসম্মত নয়। চুল বেশি ক্যামিকেলের ছোঁয়া পেলে ড্যামেজ হয়ে যেতে পারে। এজন্য চুলে সবসময় হালকা তেল মালিশ করা ভালো। তাছাড়া, বেশি ক্যামিকেল প্রোডাক্ট ব্যবহার করার ফলে চুল নষ্ট হয়েও যেতে পারে।

ক্যামিকেল ফ্রী হারবাল অয়েল

চুল বাঁধার ধরণ

চুলকে যেকোনো রূপ দেয়া যায়। চুল চাইলে খোঁপা করা থেকে শুরু করল ঝুঁটি, বেণী যা ইচ্ছা করা যায়। এটা যেমন সৌন্দর্য বর্ধন করতে সহায়ক, তেমনি আবার চুলকে গোছানোও রাখে। কিন্তু যদি চুলকে একেক সময় একেক রূপ দেয়া হয়, তাতে চুলের গোড়া নরম হয়ে যায়, পাশাপাশি চুল ভঙ্গুর হয়ে যায়। ঘন ঘন চুলের স্টাইল পাল্টানোর ফলে চুলের বৃদ্ধি ব্যহত নয়। তাই ঘন ঘন স্টাইলিং এর বিষয়টা এড়িয়ে চলতে হবে। আর চুল বেশী খোলা না রাখাই ভালো। এতে চুলে ময়লা জমে যায়।

চুলের খাদ্য

এর মানে হচ্ছে চুলের পুষ্টি উপাদানের জন্য দরকারি ভিটামিন। আপনি আপনার চুলের যত্নে ঘরোয়া টিপস এর খোঁজ করলে এই জিনিসটি দরকারি। কারণ, ভিটামুন সি চুলের গোড়ায় পুষ্টি জোগাতে সহায়তা করে। আবার, ডাবের পানি, ডিটক্স ওয়াটার এসব পান করার ফলে তার প্রভাব চুলের ওপর পড়ে, যা চুলকে করে তোলে মসৃন, সুন্দর ও স্বাস্থ্যজ্জ্বল।

চুলের গোড়া লালচে হতে দেয়া যাবে না

চুলের আগা যদি লালচে হয়ে যায়, তাহলে চুলের সবটুকু সৌন্দর্যই নষ্ট হয়ে যায়। এজন্য, চুলের মাথায় নিয়মিত তেল মালিশ করতে হবে। দরকার হলে তেল সামান্য গরম করে নিতে হবে। এতে চুল ভালো থাকে। আর নিয়মিত চুলে আঁচড় টানতে হবে। তাই, চুলের যত্নে ঘরোয়া টিপস অনুসরণ করতে ১৩ নম্বর স্টেপটি অবশ্যই অনুসরণ করুণ।

ডাল ধোয়া পানি

ডাল ধোয়া পানি ফেলে না দিয়ে তা চুলে অ্যাপ্লাই করুণ। এতে করে চুল মসৃন হয় দ্রুত। আর ডাল ধোয়া পানি  চুলে দেয়ার ফলে মাথায় ঠান্ডা অনুভূত হবে। পাশাপাশি চুল কিছুটা পুষ্টিও পেয়ে যাবে, বিশেষ করে চুল কিছু ইনস্ট্যান্ট প্রোটিন পাবে।

হেনার প্রয়োগ

অনেকেই সাদা চুল দূর করতে মেহেদী পাতা বাটা বা হেনা ব্যবহার করেন। আবার অনেকেই এটা স্টাইলের জনয় ব্যবহার করেন। তবে আপনি যদি চুলের যত্ন নেয়ার লক্ষ্যে সামান্য টক দই, আমলকীর শুকনা গুঁড়া ও হেনা মিক্স করে চুলে প্রয়োগ করেন, তাহলে চুল সুন্দর হয়ে উঠবে। এটা চুলের জন্য উপকারীও বটে। এই উপায়গুলো ব্যবহার করে চুলের যত্ন নেয়া যায় সহজেই।

সবশেষে

এই লেখায় আমরা চুলের যত্নে ঘরোয়া টিপস নিয়ে আলোচনা করেছি। কীভাবে আলাদা খরচা করা ছাড়া বাসায় বসেই নিয়মিত চুলের যত্ন নিতে পারবেন, তা দেখিয়ে দিয়েছি এই লেখাতক। আশা করি চুলের যত্নে ঘরোয়া টিপস নিয়ে এই লেখাটি আপনাদের ভালো লাগবে।

Leave a Reply