গর্ভাবস্তা একটি মেয়ের জীবনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ও আনন্দময় মূহুর্ত। সন্তান প্রসবের মাধ্যমেই একজন মেয়ের জীবন পরিপূর্ণতা লাভ করে। কিন্তু জীবনের এই সেরা সময়ও একজন মেয়ে কে তার স্বাস্থ্য ও রূপের যত্ন নিতে হয়।
কারন এই সময় গর্ভবতী মায়ের শরীরে নানা রকম হরমন এর পরিবর্তন ঘটে।
এছাড়াও পেটের মধ্যে থাকা ছোট্ট সোনামণি মায়ের শরীর থেকেই সকল পুষ্টি নিয়ে থাকে। আর এজন্যই একজন হবু মা কে সাধারণ সময় এর চেয়ে আরও বেশি যত্নশীল হতে হয়।
গর্ভাবস্থায় মায়ের শরীরে যে হরমন এর পরিবর্তন ঘটে তার সবচেয়ে বেশি ইফেক্ট পড়ে চুলের উপরে। এইকারনে বেশিরভাগ মায়ের ই স্বাভাবিক এর চেয়ে বেশি চুল পড়তে শুরু করে, যা এক সময় স্থায়ী হয়ে যায়। আর ধীরে ধীরে মাথায় চুলের ঘনত্ব কমে যায়। তাই এই সময় স্ব্যাস্থের পাশাপাশি চুলের ও আলাদা করে যত্ন নিতে হয়।
তাই আপনি যদি হবু মা হয়ে থাকেন তাহলে আপনাকে অগ্রীম শুভেচ্ছা জানিয়েই শুরু করছি আজকের আর্তিকে গর্ভবতী মায়ের চুলের যত্ন।
তেল মালিশ করা
এই সময়ে বেশি বেশি মাথায় তেল মালিশ করা প্রয়োজন। কারণ হরমনাল প্রভাবের কারনে অনেকের চুল রুক্ষ ও শুষ্ক হয়ে যায়। যার দরুন চুল পড়া শুরু হয়। এছাড়াও তেল মালিশ করলে মাথায় ভাল ম্যাছেজ ও যা হবু মাকে রিলাক্স রাখতে সাহায্যে করে। তাই সপ্তাহ অন্তত ৪ দিন তেল মালিশ করা ভাল। খেয়াল রাখতে হবে তেল যেন অবশ্যই খাঁটি নারকেল তেল হয়। এতে মাথা ঠান্ডা থাকে। অবশ্য অনেকেই হারবাল তেল সাজেস্ট করে থাকেন। কারন ভাল মানের হারবাল তেলে অনেক গুলি উপকারী ভেষজ উপাদান থাকে যা চুল পড়া অনেক কমিয়ে দেয়।
হেয়ার কালার ব্যবহার না করা
হবু মায়েদের অনেকেই আছেন যারা অনেক ফ্যাশন সচেতন। তাদের অনেকেই চুলে নানা রকম কালার ব্যবহার করে থাকেন। এই সময় তাদের চুলের কালার ব্যবহার করা থেকে বিরত থাকতে হবে। কারন হেয়ার কালারে থাকে নানা রকম কেমিকলস। যা মা ও তার অনাগত শিশুর জন্য খুব ক্ষতিকর হতে পারে।
মাথা মেসেজ করানো
অনেকেই আছেন যারা চুলে খুব একটা তেল ব্যবহার করা পছন্দ করেন না। নিয়মিত তেল ব্যবহার করলে মেসেজ করা এমনিতেই হয়ে যায়।তবুও যারা তেল ইউজ করেন না তারা আলাদা ভাবে মাথা মেসেজ করাবেন। এতে চুলের গোড়ায় রক্ত সঞ্চালন বৃদ্ধি পায় যা চুল পড়া রোধ করে।
সঠিক শ্যাম্পু ব্যবহার
গর্ভবতী মায়েদের জন্য ভাল মানের শ্যাম্পু ব্যবহার করা উচিৎ। বিশেষ করে এস এল এস ফ্রি শ্যাম্পু ব্যবহার করা ভাল। সাধারণ মানের শ্যাম্পু চুলের গোড়া নরম করে দেয়। যা চুল পড়া আরও কমিয়ে দেয়।
চুল টাইট করে না বাধা
অনেকেই চুল অনেক শক্ত করে বাধেন বা বেনুনি করেন। শক্ত করে চুল বাধার ফলে চুলের গোড়ায় অনেক টান যা চুল পড়া বাড়িয়ে দেয়।তাই চুল বাধা যেন বেশি টাইট না হয়ে যায় সে দিকে খেয়াল রাখা।
ভেজা চুল না আঁচড়ানো
অনেকেই ভেজা অবস্থায় আঁচড়িয়ে ফেলেন। যা একদম ই ঠিক না। কারন ভেজা অবস্থায় চুলের গোড়া অনেক আলগা থাকে। তাই গোছলের পড়ে টাওয়েল দিয়ে চুল আলগা করে পেচিয়ে রাখতে হয় চুল না শুকানো পর্যন্ত। এর পর চুলে শুকিয়ে গেলে মেটা চিরুনি দিয়ে চুল আঁচড়াতে হবে।
এছারাও অনেকেই বলেন চুলের আগা ছেটে ফেলার জন্য। এটা যার যার নিজের মতামত। কারন আপনার চুল যদি স্বাস্থ্য উজ্জ্বল হয় তাহলে ছেটে ফেলার কি দরকার। চুলের আগা যদি ফাটা থাকে তাহলে ছেঁটে ফেলা যেতে পারে। চুলের আগা ফাটাও একটা সমস্যা। এজন্য ভাল মানের হারবাল হেয়ার ওয়েল ব্যবহার করা যেতে পারে।
বেস্ট হেয়ার ওয়েল দেখতে ক্লিক করুন।
হেয়ার প্যাক ব্যবহার করা
মাসে অন্তত ২বার হেয়ার প্যাক ব্যবহার করতে পারেন। তবে সেই হেয়ার প্যাক এ আমলা, মেথি, মেহেদী,রক্তজবা,কালকেশর, নিম থাকতে হবে।
হেয়ার প্যাক নিতে ক্লিক করুন।
উপরোক্ত নিয়মগুলি ফলো করলে গর্ভাবস্থায় চুল পড়া অনেক কমে যাবে। তবে এসবের পাশাপাশি বেশি বেশি পানি পান করতে হবে, ভিটামিন ও মিনারেল যু্ক্ত খাবার খেতে হবে ও নিয়ম মাফিক ঘুমাতে হবে। তাহলে ইনশাআল্লাহ চুল পড়া অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে থাকবে।